১০৪ বছর বয়সে মুক্তি: নির্দোষ লক্ষ্মণ লালের ৪৩ বছর কারাবাসের করূন গল্প
২০২৫ সাল। দীর্ঘ ৪৮ বছর পর আদালত রায় দেয়— লক্ষ্মণ লাল নির্দোষ! কিন্তু তখন তার বয়স ১০৪ বছর। কারাগারের অন্ধকার প্রাচীরের পেছনে কেটে গেছে ৪৩টি বছর। পরিবার, সমাজ, সময়— সবকিছুই ছেড়ে এসেছিলেন তিনি। যখন জেল থেকে বেরোলেন, তখন চেনা পৃথিবীটাই বদলে গেছে।
আমি খুন করিনি, তবু আমাকে মরতে হলো প্রতিদিন
লক্ষ্মণ লালের কথায়, আমার জীবন শেষ হয়ে গেছে কারাগারে। আদালত আমাকে নির্দোষ বলল, কিন্তু কে ফিরিয়ে দেবে আমার যৌবন, পরিবার, স্বপ্ন?"* তার পরিবারের সদস্যরা হয় মারা গেছেন, নয়তো তাকে ভুলে গেছেন। কারাগারের বাইরের পৃথিবী এখন তার কাছে অচেনা।
বিচার ব্যবস্থা নয়, বিলম্বিত অবিচার
এই মামলায় চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল— ভারতের বিচার ব্যবস্থা কতটা ধীরগতির এবং অকার্যকর। একটি মামলা নিষ্পত্তি হতে সময় লেগেছে **প্রায় অর্ধশতাব্দী**! লক্ষ্মণ লালের মতো কতজন নির্দোষ মানুষ আজও জেলে পচছেন?
১৯৭৭ সালে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন।
১৯৮৫ সালে প্রথম আপিল, খারিজ।
-২০০১ সালে হাইকোর্টে মামলা, শুনানি পিছিয়েছে বারবার।
২০২৫ সালে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়— **প্রমাণের অভাব, লক্ষ্মণ লাল নির্দোষ।
কিন্তু ৪৩ বছর পর এই রায়ের কী অর্থ আছে?
জীবিত কবর"—একটি নির্দোষ মানুষের জন্য
লক্ষ্মণ লালের জীবন প্রশ্ন তুলেছে:
- কেন এত দেরি?
কে দেবে তার ক্ষতিপূরণ?
এমন কত লক্ষ্মণ লাল আজও জেলে আটকা?
তার মুক্তির পর সরকার ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। কিন্তু ৪৩টি বসন্তের মূল্য কি টাকায় পরিমাপ করা যায়?
শেষ কথা: বিচার বিলম্বিত হলে তা আর বিচার থাকে না
লক্ষ্মণ লালের করুণ গল্প শুধু তার একার নয়— এটি ভারতের লক্ষ্য বিচারপ্রার্থীর গল্প। একটি অকার্যকর ব্যবস্থা কীভাবে একজন মানুষের সমস্ত জীবন কেড়ে নিতে পারে, তার জ্বলন্ত প্রমাণ এই ঘটনা।
বিচার পেতে যদি একজনের পুরো জীবন লেগে যায়, তাহলে সেই বিচারের কোন অর্থই থাকে না।
এই ঘটনা যেন আমাদের জাগ্রত করে— বিচার ব্যবস্থার সংস্কার এখনই সময়ের দাবি।
---
#NoMoreDelayedJustice #LaxmanLal #JudicialReform
লেখক: Avijit Bose
তারিখ: 03/06/2025
---
**এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন, যাতে লক্ষ্মণ লালের কণ্ঠ**

0 মন্তব্যসমূহ