⚫ সাংগারেড্ডি ট্র্যাজেডি: প্রাণ হারাল ১১ শ্রমিক, দোষ কোথায়?
সাংগারেড্ডির লাবুরি ভিলেজের একটি ফার্মা কারখানায় বিষাক্ত গ্যাস লিক হয়ে ১১ জন শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আরও ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই ঘটনার পর স্থানীয় মানুষ এবং নিহতের পরিবার ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। প্রশ্ন উঠছে, কারখানার সেফটি টিম এবং সরকারের নজরদারির ত্রুটি এই মৃত্যুর জন্য কতটা দায়ী?
🩸 কীভাবে ঘটল দুর্ঘটনা?
মঙ্গলবার গভীর রাতে নাইট শিফটে কাজ করার সময় একটি রিঅ্যাক্টর থেকে মিথাইল ক্লোরাইড এবং অন্যান্য বিষাক্ত রাসায়নিক গ্যাস লিক হতে শুরু করে।
* শ্রমিকেরা শ্বাসকষ্ট এবং বমি করতে শুরু করে।
* পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এবং পর্যাপ্ত গ্যাস অ্যালার্ম সিস্টেম কাজ না করায় শ্রমিকেরা বের হতে পারেননি।
* হাসপাতাল পৌঁছানোর আগেই ৮ জনের মৃত্যু হয়, পরে হাসপাতালে আরও ৩ জন মারা যান।
🚨 কী কী সেফটি ত্রুটি ছিল?
প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে:
1️⃣ **গ্যাস লিকেজ অ্যালার্ম এবং সেন্সর কাজ করছিল না।
2️⃣ কারখানার মধ্যে ইমারজেন্সি এক্সিট গেট লক করা ছিল।
3️⃣ শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত প্রটেকটিভ মাস্ক ও সেফটি গিয়ার ছিল না।
4️⃣ নিয়মিত সেফটি ড্রিল করা হয়নি।
5️⃣ গ্যাস লিকেজ হলে কীভাবে রেসপন্ড করতে হবে, শ্রমিকদের সেই প্রশিক্ষণ ছিল না।
নিজস্ব সংবাদদাতা | সাংগারেড্ডি | ৩ জুলাই, ২০২৫
লেখক: অভিজিৎ বোস
🏢 সরকারের নজরদারির অভাব
🔹 স্থানীয় শ্রমিক সংগঠন এবং নাগরিকদের অভিযোগ, **সাংগারেড্ডি শিল্পাঞ্চলে বহু ফার্মা ও কেমিক্যাল কারখানার বিরুদ্ধে সেফটি রেগুলেশন লঙ্ঘনের অভিযোগ থাকলেও সরকার এবং পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড ব্যবস্থা নেয়নি।**
🔹 নিয়মিত ইন্সপেকশন না হওয়া, ফাইলের নোটিশ দিয়ে ইন্সপেকশন দেখিয়ে ক্লিয়ারেন্স দেওয়া, এবং দুর্নীতির অভিযোগও সামনে আসছে।
🔹 কারখানার সেফটি অডিটের রিপোর্ট জাল করার অভিযোগ তদন্তে উঠে আসছে।
---
🗣️ স্থানীয়দের ক্ষোভ
এক স্থানীয় শ্রমিকের পরিবারের সদস্য জানিয়েছেন:
> সেফটি টিম আর সরকার যদি নজরদারি করত, তাহলে আজ আমাদের ভাই-বোনেরা মারা যেত না। আমরা বিচার চাই।
---
⚖️ তদন্ত এবং পরবর্তী পদক্ষেপ
* তেলঙ্গানা সরকার মৃতদের পরিবারকে ২০ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে।
* তদন্তের জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
* কারখানার মালিক এবং সেফটি ম্যানেজারকে আটক করেছে পুলিশ।
* এনভায়রনমেন্টাল রেগুলেশন এবং ফ্যাক্টরি সেফটি রেগুলেশন কঠোরভাবে কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রশাসন।
সাংগারেড্ডি ট্র্যাজেডি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, **দেশে শিল্প নিরাপত্তার নিয়ম থাকলেও সেগুলোর প্রয়োগ এবং নিয়মিত তদারকি না হলে শ্রমিকদের জীবন কতটা বিপদের মুখে থাকে।**
শুধু ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করে নয়, নিয়মিত অডিট, ইমারজেন্সি প্রটোকল, প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত অ্যালার্ম সিস্টেমকে সক্রিয় রাখাই হবে ভবিষ্যতের জন্য আসল পদক্ষেপ।
---

0 মন্তব্যসমূহ