Ticker

6/recent/ticker-posts

Ad Code

Responsive Advertisement

২১ জুলাই থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ২৩ জুলাই

চন্দ্রশেখর আজাদ: অদম্য সাহস ও দেশের জন্য আত্মবিসর্জনের অনুপ্রেরণা

চন্দ্রশেখর আজাদ 


ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে কিছু নাম চিরভাস্বর হয়ে থাকবে, তাদের মধ্যে অন্যতম চন্দ্রশেখর আজাদ। তিনি কেবল একজন বিপ্লবী ছিলেন না, ছিলেন দেশের জন্য আত্মোৎসর্গের এক উজ্জ্বল প্রতীক।


প্রাথমিক জীবন ও বিপ্লবের প্রতি আকর্ষণ

চন্দ্রশেখর আজাদের জন্ম ১৯০৬ সালের ২৩ জুলাই, মধ্যপ্রদেশের ভাওরা গ্রামে। তার প্রকৃত নাম ছিল চন্দ্রশেখর তিওয়ারি। ছোটবেলা থেকেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর এক অদম্য মানসিকতা তার মধ্যে গড়ে ওঠে। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং প্রথমবার গ্রেফতার হন। বিচারক যখন তার নাম জানতে চাইল, তিনি বলেছিলেন,


 “আমার নাম আজাদ, বাবার নাম স্বাধীনতা এবং বাড়ি কারাগার”


সেখান থেকেই তার নাম হয়ে যায় আজাদ 


বিপ্লবী কার্যকলাপ


আজাদ ছিলেন হিন্দুস্তান সোশালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশন (HSRA)এর অন্যতম প্রধান নেতা। তিনি ভগৎ সিং, রাজগুরু, সুখদেবদের সঙ্গে মিলে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলন পরিচালনা করেন। কাকোরি ট্রেন ডাকাতি, লালা লাজপত রায়ের হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডে তার সরাসরি ভূমিকা ছিল।


জীবন দর্শন ও সাহস


চন্দ্রশেখর আজাদ বিশ্বাস করতেন,


আমরা স্বাধীনভাবে বাঁচব, আর যদি মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়, তবে ব্রিটিশদের হাতে নয়।


তিনি সবসময় নিজের কাছে এক রিভলভার রাখতেন, এবং প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তিনি জীবিত অবস্থায় কখনো ব্রিটিশ পুলিশের হাতে ধরা দেবেন না।


শহিদ হওয়া


২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৩১ সালে আল্লাহাবাদের এলফ্রেড পার্কে পুলিশ তাকে ঘিরে ফেলে। বহুক্ষণ যুদ্ধ করার পর, শেষ গুলিটি নিজেকেই撃 করে আত্মাহুতি দেন। তার মৃত্যুর পরও, তার ‘আজাদ’ নামের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা দেশপ্রেমিকদের কাছে চিরকাল প্রেরণার উৎস হয়ে আছে।


চন্দ্রশেখর আজাদের জীবন থেকে শিক্ষা


✅ অন্যায়ের বিরুদ্ধে ভয়হীন লড়াই।

✅ দেশপ্রেমকে জীবনের সর্বোচ্চ আদর্শ হিসেবে রাখা।

✅ প্রতিজ্ঞা ও নীতির প্রতি অটল থাকা।

✅ যুবসমাজকে সাহসী ও সংগ্রামী হতে উদ্বুদ্ধ করা।


আজকের প্রেক্ষাপটে আজাদের প্রেরণা


বর্তমান প্রজন্মের কাছে চন্দ্রশেখর আজাদের জীবন একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়— যদি দেশের জন্য, ন্যায়ের জন্য এবং সমাজের জন্য কিছু করতে হয়, তবে ভেতরের ভয়কে জয় করতে হবে এবং নিজের দায়িত্ব থেকে পিছু হঠা যাবে না।


উপসংহার


চন্দ্রশেখর আজাদ ছিলেন না, তিনি আছেন এবং থাকবেন আমাদের অন্তরে।তার আত্মত্যাগ ও বীরত্ব আমাদের জীবনের যেকোনো কঠিন পরিস্থিতিতেও অনুপ্রেরণা দেয় লড়াই করার জন্য, ভয় না পেয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। আসুন, তার আদর্শকে বুকে ধারণ করে আমরা নিজেদের মধ্যে থাকা ভয়কে জয় করি এবং সমাজে, দেশে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য অবিরত কাজ করে যাই।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ